Wednesday, May 27, 2015

বৈদিক বিজ্ঞানঃ জন্ডিস নিরাময় ও সূর্যালোক



বৈদিক বিজ্ঞানে জন্ডিসের চিকিৎসা 

আজ আপনাদের কাছে তুলে ধরব নবজাতক শিশুর জন্ডিস নিরাময়ের উপর অথর্ববেদের একটি মন্ত্রের বিস্ময়কর বিজ্ঞান!

অনু সূর্যমুদযতাং হৃদ্দযোতো হরিমা চ তে
গো রোহিতস্য বর্ণেন তেন ত্বা পরি দধ্মসি।।
(অথর্ববেদ ১.২২.১)
অনুবাদ-তোমার দেহকে হলুদ রঙের করে দেয়া রোগটি(জন্ডিস) উদীয়মান সূর্যের রশ্মিতে নিরাময় হোক,আমরা তোমাকে যত্নে শুইয়ে দেই সূর্যের আলোতে

এখন ঘুরে আসি নবজাতক শিশুর জন্ডিস নিরাময়ের একটি গুরুত্বপূর্ন আবিস্কারের অদ্ভুত ঘটনা থেকে

১৯৫৮ সালে Dr.Cremer তাঁর রচিত একটি প্রবন্ধে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন ইংল্যান্ডের এসেক্স এর রকফোর্ড হসপিটালের একজন নার্স সদ্যোজাত একটি সন্তানকে যত্নের জন্য একটি টাওয়েলে মুড়িয়ে হাসপাতালের উঠানে মুক্ত হাওয়া ও রোদে শুইয়ে দেন যে শিশুটি ছিল জন্ডিসে আক্রান্তঅনেকক্ষন পর এটি দেখে ডক্টররা তাকে ভত্‍সর্না করলেন এবং বাচ্চাটিকে নিয়ে আসলেনকিন্তু আশ্চর্যভাবে তখন ওই বাচ্চার বিলিরুবিন(যে পদার্থটি দেহে বাড়ার কারনে জন্ডি হয়) পরীক্ষা করালে দেখা যায় যে তার পরিমান আগের থেকে কমে গিয়েছে!পরবর্তীতে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে সূর্যালোক ওই বিলিরুবিনকে জারিত করে বিলিভার্ডিন এ রুপান্তরিত করে যার ফলে শিশুর জন্ডিসের মাত্রা কমে এবং শিশু কার্নিকটেরাস নামক মারাত্মক জীবনঘাতি রোগ থেকে বেঁচে যায়

এরপর থেকে এখন পর্যন্ত নিওনেটাল জন্ডিসের চিকিত্‍সায় প্রথম চিকিৎসা হিসেবে এই ফটোথেরাপী বা আলোকচিকিত্সা ব্যবহৃত হয়ে আসছে!

সত্য পবিত্র বেদের বানী ছড়িয়ে দিন সর্বত্র(সংগৃহিত)

Monday, May 25, 2015

পিতা ও মাতার প্রনাম মন্ত্র



পিতার প্রনাম মন্ত্র :
পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহি পরমং তপ
পিতোরি প্রিতিমা পন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতাঃ।।

মাতার প্রনাম মন্ত্র :
মাতা জননী ধরিত্রী, দয়াদ্র হৃদয়া সতী
দেবীভ্যো রমণী শ্রেষ্ঠা নির্দ্দোশা সর্ব দুঃখ হারা।।

বুড়ো আঙুলে ভাগ্যের গোপন কথা!


হস্তরেখা বিজ্ঞানে শুধু হাতের রেখা নয়, হাতের আঙুলগুলিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। হাতের বিভিন্ন আঙুল মানুষের জীবনের বিভিন্ন দিক বর্ণনা করে থাকে। হস্তরেখা বিশারদরা এই কারণে আঙুল দেখে ব্যক্তির ভবিষ্যৎ, জাতকের চরিত্র বিচার করে থাকেন।
এই বিচারের পরেই হস্তরেখা বিশারদরা জাতকের সমস্যাগুলি সম্বন্ধে নিশ্চিত হন এবং তার সমাধানের পথ নির্ণয় করে থাকেন।
হাতের আঙুল গুলির মধ্যে বুড়ো আঙুল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জটিল গণনাগুলি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আপনার বুড়ো আঙুলের সহজ কিছু গণনা পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো-
জেনে নিন কীভাবে একজনের বুড়ো আঙুলই বলে দেবে তার গোপন কথা। জানতে চান, কোন কোন রহস্য বলে দিতে পারে আপনার বুড়ো আঙুল!
আপনার বুড়ো আঙুল সহজেই বলে দিতে পারে আপনার জন্মকালীন পক্ষের হিসাব। অর্থাৎ বুড়ো আঙুল বলে দিতে পারে আপনি কোন পক্ষে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এই বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে লক্ষ করতে হবে ওই ব্যক্তির বুড়ো আঙুলে থাকা যবের চিহ্নটি। এই চিহ্ন অনেক সময়য়ই খুব ছোট বা হালকাভাবে থেকে থাকে। তাই, আতস কাচ ছাড়া এই চিহ্ন অনেক সময় দেখা যায় না।
গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আঙুলের মাঝামাঝি একখানি যবের দানার চিহ্ন দেখা যায়। যদিও সবার হাতে এই চিহ্ন বুড় আঙুলে দেখা যাবে এমন কথা বলা যায় না। হাতের অন্যান্য আঙুলেও যব চিহ্ন থাকে।
যব চিহ্নকে চেনার সব থেকে সহজ উপায় হলো বুড়ো আঙুলের মধ্যে একটি যবের দানাকে কল্পনা করুন। তারপর আপনার আঙুলের রেখাগুলিকে মিলিয়ে দেখুন সেখানে যবের দানার মতো কোনো রেখা দেখতে পান কিনা।
হস্তরেখা বিজ্ঞানে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির ডান বুড়ো আঙুলে যবের চিহ্ন থাকার অর্থ, সেই ব্যক্তি শুক্লপক্ষের দিনে জন্মগ্রহণ করেছেন। আবার বাম বুড়ো আঙুলের  মাঝখানে যব চিহ্ন থাকলে জানবেন, কৃষ্ণপক্ষের রাতে ওই ব্যক্তির জন্ম। কিন্তু দুই বুড়ো আঙুলের মাঝখানে যবের চিহ্ন থাকার অর্থ, কৃষ্ণপক্ষের সকালে ওই ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছেন।
জন্মগ্রহণের এই সময় থকে ব্যক্তির ভাগ্যের আভাস পাওয়া যায়। আপনারা জানেন জন্ম সময়ের গ্রহের অবস্থান মানুষের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।
বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের যব চিহ্ন দেখে ব্যক্তির ইন্দ্রিয়ে উপস্থিত তিলের চিহ্ন সম্পর্কেও জানা যায়। যে ব্যক্তির ডান বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের মাঝখানে যবের চিহ্ন থাকে, তার যে কোনো ইন্দ্রিয়ের ডান অংশে তিলের চিহ্ন পাওয়া যায়। আবার বাম বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠে যব চিহ্ন থাকলে বামঅংশে তিলের চিহ্ন থাকে বলে মনে করা হয়।
ইন্দ্রিয়ে তিলের চিহ্ন দেখে নির্ণয় করা যায় ওই ব্যক্তির কোন ইন্দ্রিয় তার জীবনে কী প্রভাব ফেলতে চলেছে।
হস্তরেখা বিজ্ঞান অনুযায়ী বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠে যবের চিহ্ন থাকলে ব্যক্তি রাজা বা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং অগ্রজদের কাছ থেকে সম্পত্তি, অর্থ ইত্যাদি লাভ করেন। এমন ব্যক্তি নীতিবান এবং বিদ্বান হয়ে থাকেন। তিনি যশের অধিকারী হন। যে ব্যক্তির বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের মূলে যবের চিহ্ন থাকে তিনি ধনী, এবং সুখি জীবন-যাপন করেন।
http://www.deshebideshe.com/news/details/41173#sthash.BdbyIHpL.dpuf

Sunday, May 24, 2015

জামাই ষষ্ঠী'১৫

গ্রাম ও শহরে জামাই ষষ্ঠীর রেওয়াজটা পুরোপুরি উঠে যায়নিÑ এখনও রয়েছে। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে ষষ্ঠী তিথিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা ষষ্ঠী পূজা করেন। ষষ্ঠীকে সন্তান-সন্তুতি দেবী বা দেববহির্ভূত লৌকিক দেবীও বলা যায়। ঘর ও মন্দিরের বাইরে বট, করমচার ডাল পুঁতে প্রতীকী অর্থে অরণ্য রচনা করে এ পূজা করা হয়। এজন্য জামাই ষষ্ঠীকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলা যায়। এ পূজায় ধর্মীয় সংস্কারের চেয়ে সামাজিকতা বিশেষ স্থান পেয়েছে।

আশুতোষ ভট্টাচার্য বলেছেন, এ পূজার লক্ষ্য সন্তান উৎপাদনের জন্য শাশুড়ি কর্তৃক জামাই সংবর্ধনা।ষষ্ঠী পূজায় ব্রতীরা সকালে øান করে উপবাস থেকে নতুন পাখার ওপর আম্রপল্লব, আমসহ পাঁচফল আর ১০৮টি দুর্বাবাঁধা আঁটি দিয়ে পূজার উপকরণের সঙ্গে রাখে। করমচাসহ পাঁচ-সাত বা নয় রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার ওপর সাজিয়ে পূজার সামনে রাখতে হয়। ধান এ পূজার সমৃদ্ধির প্রতীক, বহু সন্তানের প্রতীক হিসেবে ব্যবহƒত হয় এবং দুর্বা চিরসবুজ, চির সতেজ অসীমতার বেঁচে থাকার ক্ষমতার অর্থে ব্যবহƒত হয়। অর্থাৎ দুর্বা হল দীর্ঘ জীবনের প্রতীক। শাশুড়ি-মেয়ে-জামাতার দীর্ঘায়ু কামনা করে ধানদুর্বা দিয়ে উলুধ্বনিসহ ষাট ষাট বলে বরণ করেন। প্রবাদে আছে, যম-জামাই ভাগনা-কেউ নয় আপনা। কারণ যম মানুষের মৃত্যু দূত। জামাই এবং ভাগনা অন্যের বাড়ির উত্তরাধিকারী। তাদের কখনও নিজের বলে দাবি করা যায় না। এদের খুশি করার জন্য মাঝে মাঝেই আদর আপ্যায়ন করে খাওয়াতে হয়। তাই মেয়ে যাতে সুখে-শান্তিতে তার দাম্পত্য জীবন কাটাতে পারে এজন্য জ্যৈষ্ঠ মাসে নতুন জামাইকে আদর করে বাড়িতে ডেকে এনে আম-দুধ খাইয়ে পরিতৃপ্ত করে। আশীর্বাদস্বরূপ উপহারসমাগ্রীও প্রদান করে।কোনও কোনও অঞ্চলে শ্যালিকারা বাঁশের শলা বেঁকিয়ে হƒদয়ের আকার করে তার মধ্যে লাল সুতা দিয়ে ধান বেঁধে ভগ্নিপতিকে জামাই ষষ্ঠীর উপহার দেয়। এ প্রথাটা সর্বত্র দেখা যায় না।কোনও কোনও অঞ্চলে আবার সদ্যøাত ব্রতীরা পূজার সময় নতুন পাখার ওপর আম্রপল্লব, আম আর ১০৮টি দুর্বা বাঁধা আঁটি দিয়ে পুকুরে কোমর জলে নেমে উলুধ্বনিসহ নতুন প্রকৃতিকে ষাট ষাট বলে বরণ করেন। নারীর কণ্ঠে এ উচ্চারণ জীব-প্রকৃতি-পরিবেশ-মানবতা রক্ষার আহ্বান করে পূজা শেষে ষষ্ঠীর সুতা সবার হাতে বেঁধে পরিবার-সমাজকে এক প্রীতির বন্ধনে বাঁধেন। ষষ্ঠী পূজার ব্রত পাঠের সময় নারীরা ১০৮টি দুর্বার গিঁট খুলে সাতবার গণনা করেন।পুরনো ঢাকা এবং চট্টগ্রামে মেয়ের বিয়ে পাকা হলে তখন উভয়পক্ষ নিমন্ত্রণ করে জ্যৈষ্ঠ মাসে আম-দুধ খাওয়ানোর প্রচলন রয়েছে। এছাড়াও বারোমাসির গানে দেখা যায়, জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাতাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসে আম-দুধসহ অন্যান্য খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেও জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাতাকে বাড়িতে এনে আম-দুধ খাওয়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। তবে জামাই ষষ্ঠীর উপাচারগুলো সব অঞ্চলে এক রকম নয়। অঞ্চল ভেদে এর ভিন্নতা রয়েছে।
(রীতা ভৌমিক)

কৃষ্ণকলি --রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর



কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,  
        কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে  
        কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,  
মুক্তবেণী পিঠের 'পরে লোটে
        কালোতা সে যতই কালো হোক,  
        দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ

ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে  
        ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,
শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে  
        কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই
আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু  
শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু
        কালোতা সে যতই কালো হোক,  
        দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ

পূবে বাতাস এল হঠাত্‍‌ ধেয়ে
        ধানের ক্ষেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ
আলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেম একা
        মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ
আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে
আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে
        কালোতা সে যতই কালো হোক
        দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ

এমনি করে কাজল কালো মেঘ  
        জ্যৈষ্ঠমাসে আসে ঈশান কোণে
এমনি করে কালো কোমল ছায়া 
        আষাঢ়মাসে নামে তমাল-বনে
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে 
হঠাত্‍‌ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে
        কালোতা সে যতই কালো হোক
        দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,  
        আর যা বলে বলুক অন্য লোক
দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে 
        কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ
মাথার পরে দেয়নি তুলে বাস
লজ্জা পাবার পায়নি অবকাশ
        কালোতা সে যতই কালো হোক
        দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ